মুসলিম
বিবাহ একটি দেওয়ানী চুক্তি। কোন অনুষ্ঠান নহে। নারী ও পুরুষের বৈধ বিলন দ্বারা ইহা
সঙঘটিত হয়ে থাকে। প্রেম-প্রীতি ও ভালবাসায় পরস্পর আকৃষ্ট হয়ে সুখী জীবন ও বৈধ মিলনেনর
মাধ্যমে সন্তানাদি জন্ম দান করাই বিবাহের উদ্দেশ্য। চুক্তির ক্ষেত্রে যে সকল উপাদান
কার্যকর হয়, সেই সকল উপাদান মুসলিম বিবাহেও কার্যকর হয়। বিবাহের ফলে স্বামীর উপর স্ত্রীর
যেমন কতিপয় আইনগত অধিকার সৃষ্টি হয়, তেমনি স্ত্রীর উপরও স্বামীর কতিপয় আইনগত অধিকার
সৃষ্টি হয়।
মুসলিম
বিবাহ সুন্নী আইনে তিন প্রকার :
1) বৈধ
বিবাহ :
যে বিবাহে মুসলিম আইনে উল্লেখিত বৈধ বিবাহের সমস্ত নিয়ম প্রতিপালিত হয়, তাকে বৈধ বিবাহ বলে। বৈধ বিবাহের ফলে:-
- স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যৌন সহবাস আইনসম্মত বৈধ হয়।
- স্ত্রী তার স্বামীর নিকট হতে দেন-মোহর পাবার অধিকার অর্জন করে।
- স্ত্রী স্বামীর নিকট হতে খোরপোষ লাভের অধিকারী হয়।
- স্ত্রী, স্বামীর গৃহে বসবাস করার অধিকার অর্জন করে।
- স্বামী স্ত্রীর গতিবিধিকে সঙ্গত পরিমাণ নিয়ন্ত্রন করার অধিকার লাভ করে।
- সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তা বৈধ সন্তান হিসাবে গণ্য হয়।
- স্ত্রী স্বামীর প্রতি, স্বামী স্ত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য থাকে।
- শারীরিক কারণ ব্যতীত স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সহবাস করিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করতে পারে না।
- স্বামী, স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের সম্পতির উত্তরাধিকারী হয়।
- তাদের সন্তান পিতামাতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হয়।
2) অনিয়মিত বিবাহ
যে সকল বিবাহ সহীহ নয় কিংবা বাতিলও নয় ঐ সকল বিবাহ সুন্নী আইন মোতাবেক অনিয়মিত বা ফাসিদ বিবাহ । এসব বিবাহের ফলে-
- স্বামী বা স্ত্রী যে কেউ যদি এই কথা বলে যে, “আমি তোমাকে পরিত্যাগ করলাম” তাহলে উক্ত বিয়ের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
- সহবাস হয়ে থাকলে যথাযথ দেনমোহর বা নির্ধারিত দেনমোহর এর মধ্যে যেটি কম সেটি প্রদান করতে হবে।
- সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তা বৈধ সন্তান হিসাবে স্বীকৃত হবে।
- স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হয় না।
- সন্তান পিতা-মাতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হবে।
3) বাতিল বিবাহ
যে সকল বিবাহ রক্ত সংক্রান্ত, জ্ঞাতি সংক্রান্ত কিংবা দুগ্ধ সংক্রান্ত বিধি নিষেধ লংঘন করে অনুষ্ঠিত হয় সুন্নী আইনে ঐ সকল বিবাহকে বাতিল বিবাহ বলে। এক স্বামী থাকাকালে কোন স্ত্রীলোক অন্য কাউকে বিয়ে করলে দ্বিতীয় বিবাহ বাতিল বিবাহ বলে গণ্য হবে। বাতিল বিবাহের ফলে-
- এই ধরনের বিবাহের চুক্তি বাতিল চুক্তি বলে গণ্য হবে।
- সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তা অবৈধ বা জারজ সন্তান বলে গণ্য হবে।
- স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের মধ্যে অধিকার ও দায়-দায়িত্ব সৃষ্টি হয় না।
- সন্তান পিতার সম্পত্তিতে উত্তরাধীকারী হয় না।
No comments:
Post a Comment