Friday, January 20, 2017

মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা, ১৯৬১ (Muslim Family Law Rules, 1961)




১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ১১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন; যথা

বিধি -১ : অত্র বিধিমালা ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা নামে অভিহিত হইবে ।

বিধি -২ : অত্র বিধিমালার বিষয়ে অথবা প্রসঙ্গে বিপরীত কোনো কিছু বর্তমানে থাকিলে-
(ক) ”চেয়ারম্যান” বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে;
(খ) ”ফরম” বলিতে অত্র বিধিমালার সহিত সংযুক্ত ফরমকে বুঝাইবে;
(গ) ”স্থানীয় এলাকা” বলিতে কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন এলাকাকে বুঝাইবে;
(ঘ) ”মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন” বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;
(ঙ) ”অধ্যাদেশ” বলিতে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (১৯৬১ সালের ৮নং আইন)-কে বুঝাইবে;
(চ) ”পৌরসভা” বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;
(ছ) ”ধারা” বলিতে অধ্যাদেশে কোন ধারাকে বুঝাইবে; এবং
(জ) ”ইউনিয়ন পরিষদ” বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে ।

বিধি-৩ : ধারার গ, ঘ অথবা চ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যে কথিত বিষয়ে যে পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতা বা এখতিয়ার থাকিবে তাহা নিম্নবর্ণিত রূপ হইবে :
(ক) ৬ ধারার ২ উপধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে বর্তমান স্ত্রী অথবা যেক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রী বর্তমান, সেইক্ষেত্রে যে স্ত্রীর সহিত স্বামী সর্বশেষে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হইয়াছিল সেই স্ত্রী স্বামীর দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।
(খ) ৭ ধারার ১ উপধারার নোটিশের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে যেই স্ত্রী সম্বন্ধে তালাক উচ্চারণ করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তালাক উচ্চারণ করার সময় বসবাস করিতেছিল এবং
(গ) ৯ ধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ও যদি একাধিক স্ত্রী উক্ত ধারায় দরখাস্ত দেয় তবে উহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে সর্বপ্রথম দরখাস্তকারিণী স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।

বিধি-৪ : (১) যদি কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরূপে কোনো অমুসলিম, নির্বাচিত হয় তবে সেইক্ষেত্রে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ যত শীঘ্র সম্ভব হইতে পারে তত শীঘ্র অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে ইহার কোনো মুসলিম সদস্যকে চেয়ারম্যানরূপে নির্বাচিত করিবেন ।
(২) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমে কোনো পক্ষ চেয়ারম্যানকে অপর পক্ষের অনুকূলে স্বার্থান্বিত বলিয়া মনে করিলে অন্য কাহাকেও চেয়ারম্যান নিযুক্তির নিমিত্ত লিখিতভাবে রেকর্ডতব্য হেতুসমূহসহ যেমন নির্ধারিত হইতে পারে তেমন ব্যক্তির নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন যিনি যথাযথ মনে করিলে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অপর কোনো সদস্যকে অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে হিসাবে নিযুক্ত করিতে পারে এবং এইরূপ নির্ধারিত ব্যক্তি উক্ত দরখাস্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সালিশী পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রাখিবেন ।

বিধি-৫ : (১) সালিশী পরিষদে আনীত কার্যব্যবস্থা চেয়ারম্যান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিচালনা করিবেন ।
(২) কোনো ব্যক্তির প্রতিনিধি মনোনয়নে ব্যর্থতার দরুন অথবা অন্য কোনোভাবে সালিশী পরিষদে কোনো পদ খালি হওয়ার কারণে এইরূপ কার্যক্রম ত্রুটিযুক্ত হইবে না ।
(৩) যদি মনোনয়ন প্রদানে ব্যর্থতার কারণ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে পদশূন্য হয় তবে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান নুতন মনোনয়ন দাবি করিবেন ।
(৪) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমের কোনো পক্ষই উক্ত পরিষদের সদস্য হইতে পারিবে না ।
(৫) সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সালিশী পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং যদি কোনো সিদ্ধান্তই সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত হিসাবে গণ্য হইবে ।

বিধি-৬ : (১) ৬ ধারার ২ উপধারায় অথবা ৯ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত বা ৭ ধারার ১ উপধারায় কোনো নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর চেয়ারম্যান লিখিত আদেশ মাধ্যমে পক্ষগণের প্রত্যেককে তাহার প্রতিনিধি মনোনয়ন করিতে নির্দেশ দিবেন ও এইরূপ প্রত্যেক পক্ষ উক্ত আদেশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর লিখিতভাবে তাহার একজন প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে ও চেয়ারম্যানের নিকট মনোনয়ন দাখিল করিবে বা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে চেয়ারম্যানকে ইহা পাঠাইবে ।
(২) যদি কোনো পক্ষের মনোনীত প্রতিনিধি মৃত্যুমুখে পতিত হয় বা অসুস্থতা বা অন্যবিধ কারণে সালিশী পরিষদের মিটিং-এ অনুপস্থিত থাকেন বা সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনাস্থাভাজন হন তবে এইরূপক্ষেত্রে পক্ষটি চেয়ারম্যানের লিখিত পূর্বানুমতিক্রমে মনোনয়নটি প্রত্যাহার করিতে পারেও চেয়ারম্যান যে সময় মঞ্জুর করিতে পারেন সেই সময়ের ভিতর নূতন মনোনয়ন প্রদান করিতে হইবে ।
(৩) যদি ২ উপধারা অনুযায়ী নূতন মনোনয়ন প্রদান করা হয় তবে চেয়ারম্যান লিখিতভাবে রেকর্ডকৃতব্য কারণে ভিন্নরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদ উহার কার্যক্রম নূতনভাবে শুরু করার প্রয়োজন পড়িবে না ।

বিধি ৭-১৩ ( বাতিল ।)

বিধি -১৪ : বহুবিবাহঃ একটি বর্তমান বিবাহ বলবত থাকাকালীন অন্য একটি প্রস্তাবিত বিবাহ ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় কিনা তাহা বিবেচনার সময় সালিশী পরিষদ ইহার সাধারণ ক্ষমতার ক্ষতি না করিয়া অন্যান্যের সহিত নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলির দিকে নজর রাখিবেন-
কোনো বর্তমান স্ত্রীর বেলায় বন্ধাত্ব দৈহিক দৌর্বল্য, দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৈহিক অনুপযুক্ততা, দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধারের নিমিত্ত একটি ডিক্রি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়াইয়া চলা অথবা বর্তমান স্ত্রীর অপ্রকৃতিস্থতা ।

বিধি -১৫ : একটি বর্তমান বিবাহ বলবত্‍ থাকাকালীন অন্য একটি বিবাহ চুক্তি করার অনুমতি প্রদানের নিমিত্ত ৬ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত লিখিতভাবে করিতে হইবে, ইহাতে বর্তমান স্ত্রী অথবা স্ত্রীগণের সম্মতি নেওয়া হইয়াছে কিনা উহা বর্ণনা করিতে হইবে, যে কারণসমূহের ভিত্তিতে নূতন বিবাহটি ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় বলা হইয়াছে সেইগুলি সংক্ষিপ্তভাবে দরখাস্তে বর্ণনা করিতে হইবে । দরখাস্তকারীর দস্তখত উহাতে থাকিতে হইবে এবং পঁচিশ টাকার ফী তত্সঙ্গে যুক্ত করিতে হইবে ।

বিধি -১৬ :রিভিশনঃ (১) ৬ ধারার ৪ উপধারায় প্রদত্ত সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত বা ৯ ধারার ২ উপধারায় প্রদত্ত কোনো সার্টিফিকেট রিভিশনের নিমিত্ত কোনো দরখাস্ত সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেট, সে যাহাই হউক প্রদানের ত্রিশ দিনের ভিতর দাখিল করিতে হইবে ও তত্সহ দুই টাকার ফী সংযুক্ত করিতে হইবে ।
(২) দরখাস্তখানা লিখিত হইতে হইবে এবং যে সকল কারণসমূহের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেটটির রিভিশন চাওয়া হয় উহা বর্ণনা করিতে হইবে ও ইহাতে দরখাস্তকারীর দস্তখত থাকিতে হইবে ।

বিধি -১৭ : গোপন কার্যক্রমঃ চেয়ারম্যান অন্যরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদের সকল কার্যক্রম গোপনে অনুষ্ঠিত হইবে ।

বিধি -(১৮ – ২০ ) বাতিল ।

*******************

No comments:

Post a Comment